
ধুনট উপজেলায় প্রতিনিধি ঃ
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় প্রতারণার শিকার হয়ে অটোভ্যান খোয়ালেন আব্দুল কাইয়ুম (১৫) নামে এক কিশোর চালক। অজ্ঞাত পরিচয়ের এক প্রতারক দম্পতির খপ্পরে পড়ে পরিবারের একমাত্র জীবিকার উৎস হারিয়ে হতাশায় ডুবে আছে এই এতিম কিশোর। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ধুনট থানা মোড় এলাকা থেকে অটোভ্যানটি খোয়া যায়। কাইয়ুম উপজেলার নিমগাছি গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাবার মৃত্যুর পর অল্প বয়সেই সংসারের হাল ধরে কাইয়ুম। ছয় সদস্যের হতদরিদ্র পরিবারে তিনিই একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। সংসারের ভরণপোষণ চালাতে প্রায় দেড় মাস আগে কষ্ট করে একটি অটোভ্যান কেনে সে। প্রতিদিন সেই ভ্যান চালিয়ে যা আয় হতো, তা দিয়েই চলত তাদের সংসার।
মঙ্গলবার সকালে অন্যান্য দিনের মতো ভ্যান নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় কাইয়ুম। ধুনট থানা মোড়ে পৌঁছালে অজ্ঞাত এক দম্পতি সোনাহাটা যাওয়ার কথা বলে ভ্যান ভাড়া নেয়। কথাবার্তার মাধ্যমে নিজেদের প্রতি আস্থা তৈরি করে প্রতারক চক্রটি। একপর্যায়ে মোড়ের পাশে ভ্যানটি তাদের এক সহযোগীর কাছে রাখতে বলে দম্পতি কাইয়ুমকে নিজেদের সঙ্গে বাজারে নিয়ে যায়। কেনাকাটার ভিড়ে সুযোগ বুঝে প্রতারকরা চুপিসারে সটকে পড়ে। প্রায় আধা ঘণ্টা পর থানা মোড়ে ফিরে এসে কাইয়ুম দেখে—ভ্যানসহ উধাও হয়ে গেছে সেই ব্যক্তিও।
অটোভ্যান হারিয়ে দিশেহারা কাইয়ুম পরে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। তবে অভিযোগে কোনো আসামির নাম উল্লেখ নেই। ধুনট থানার ডিউটি অফিসার এএসআই কুলসুমা খাতুন বলেন, “লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ওসির সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
জীবিকার একমাত্র ভরসা হারিয়ে এখন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে দাঁড়িয়ে কিশোর চালক কাইয়ুম। পরিবারের ছয়জন সদস্যের খাবার, চিকিৎসা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যয়—সবই নির্ভর করত তার অটোভ্যানের ওপর। ভ্যান হারানো মানে শুধু একটি যানবাহন নয়, পুরো পরিবারের বেঁচে থাকার স্বপ্নটাই যেন পড়ে গেছে বিপদে।